Search This Blog

Thursday, November 14, 2019

সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা, আলহামদু লি মুর্শিদ ক্বিবলা, ইনশাআ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এগুলো বলার শরয়ী ব্যাখ্যা
__________________________
__________________________
”আলহামদু, সুবহানা, ইংশাআ” ইত্যাদি যে শব্দ মুবারকসমূহ
মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে এবং উনার মহাসম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে ব্যবহার প্রসঙ্গে

মহান আল্লাহ পাক উনার শানে ব্যবহৃত উক্ত ছানা-ছিফতমূলক শব্দ মুবারক সমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে ব্যবহার করা অবশ্যই শরীয়ত সম্মত।
স্মরণীয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব হিসেবে কায়িনাত মাঝে একক। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে কায়িনাত মাঝে একক।
এককথায়, মহান আল্লাহ পাক তিনি খ¦ালিক্ব হিসেবে যেমন একক মর্যাদার অধিকারী এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সমকক্ষ যেমন কেউ নেই তেমনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাখলূক্ব হিসেবে এবং মাখলূক্বাতের মধ্যে একক মর্যাদার অধিকারী এবং উনার সমকক্ষও কেউ নেই। অনুরূপভাবে মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরও সমকক্ষ কেউ নেই। মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক শানে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَيْسَ كَمِثْلِهٖ شَيْءٌ
অর্থ: উনার মতো কিছুই বা কেউই নেই। (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
অনুরূপ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَيُّكُمْ مِثْلِىْ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে কে আছ আমার মতো? অর্থাৎ কেউই নেই। (বুখারী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَسْتُ كَاَحَدٍ مِّنْكُمْ
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের কারো মতো নই। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
একইভাবে হযরত আহলে বাইতে রসূল হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক শানে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاءِ ۚ
অর্থ: হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা অন্য কোনো মহিলাদের মতো নন। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)
মোটকথা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ পুরুষ- মহিলা আলাইহিমুস সালাম-আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অন্য পুরুষ কিংবা মহিলা উনাদের কারোই মতো নন।
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের সাথে কাউকে তুলনা করা যাবে না। (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪,
অত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়িম মাক্বাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
জানা আবশ্যক, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু খ¦ালিক্বে কায়িনাত মহান আল্লাহ পাক তিনি নন। এছাড়া মহান আল্লাহ পাক উনার যত ছিফত মুবারক রয়েছেন সমস্ত ছিফত মুবারকের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া উনার সমস্ত ছিফত মুবারকের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে মহান আল্লাহ পাক উনার সমস্ত ছিফত বা গুণ মুবারক উনাদের গুণে গুণান্বিত সে বিষয়টি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আমাকে এ বলে সালাম মুবারক পেশ করলেন-
اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا أَوَّلُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا اٰخِرُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا بَاطِنُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا ظَاهِرُ قَالَ فَأَنْكَرْتُ ذَالِكَ عَلَيْهِ وَقُلْتُ يَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَيْفَ تَكُوْنُ هٰذِهِ الصِّفَةِ لِمَخْلُوقٍ مِّثْلِىْ وَهٰذِهٖ صِفَةٌ لَا تَكُوْنُ اِلَّا لِلْخَالِقِ جَلَّ وَعَزَّ قَالَ يَا حَبِيْبَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِعْلَمْ أَنَّ اللهَ تَعَالٰى أَمَرَنِـيْ أَنْ اُسَلِّمَ عَلَيْكَ بِـهٰذَا السَّلَامِ لِأَنَّه اِخْتَصَّكَ بِهٖ دُوْنَ جَمِيْعِ الْـخَلْقِ فَسَمَّاكَ بِالْأَوَّلِ لِأَنَّكَ اَوَّلُ الْأَنْبِيَاءِ أَلْقٰى نُوْرَكَ فِيْ صُلْبِ اَبِيْكَ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُمَّ نَقَلَكَ مِنْ صُلْبٍ إِلٰى صُلْبٍ إِلٰى اَنْ أَخْرَجَه فِيْ اٰخَرِ الزَّمَانِ وَسَـمَّـاكَ الْاٰخِرَ لِأَنَّكَ اٰخِرُ الْأَنْبِيَاءَ فِي الْعَصْرِ وَخَاتَـمُ النَّبِيِّيْنَ إِلٰى اٰخِرِ الدَّهْرِ وَسَمَّاكَ بِالْبَاطِنِ لِأَنَّه قَرَنَ اِسْـمَكَ مَعَ اِسْمِهٖ فِيْ سَاقِ الْعَرْشِ مِنْ قَبْلِ اَنْ يـَخْلُقَ أَبَاكَ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِاَلْفَىْ عَامٍ ثُمَّ اَمَرَنِـىْ بِالصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَصَلَّيْتُ يَا حَبِيْبَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْفَ عَامٍ بَعْدَ أَلْفِ عَامٍ حَتّٰـى بَعَثَكَ اللهُ بَشِيْرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا إِلَى اللهِ بِإِذْنِهٖ وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا وَسَمَّاكَ بِالظَّاهِرِ لِأَنَّه أَظْهَرَكَ عَلٰى جَمِيْعِ الْأَدْيَانِ وَعَرَّفَ نُبُوَّتَكَ وَفَضْلَكَ وَشَرْفَكَ أَهْلَ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاشْتَقَ لَكَ اِسْـمًا مِّنْ اِسْـمِهٖ وَصِفَاتَه مِنْ صِفَاتِهٖ فَرَبُّكَ مَـحْمُوْدٌ وَأَنْتَ مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْـحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ فَضَّلَنِيْ عَلٰى جَـمِيْعِ خَلْقِهٖ حَتّٰـى فِيْ اِسْمِيْ وَصِفَتِيْ.
অর্থাৎ, আসসালামু আলাইকা ইয়া আউওয়ালু, আসসালামু আলাইকা ইয়া আখিরু, আসসালামু আলাইকা ইয়া বাতিনু, আসসালামু আলাইকা ইয়া যাহিরু। এভাবে সালাম মুবারক পেশ করাটা আমার নিকট আশ্চর্যজনক মনে হলো, আমি ইরশাদ মুবারক করলাম, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! এ সমস্ত ছিফত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক আমার ক্ষেত্রে কিরূপে প্রযোজ্য হতে পারে? এ সমস্ত ছিফত মুবারক তো যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য প্রযোজ্য। তিনি বললেন, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জেনে রাখুন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি এভাবে সালাম মুবারক পেশ করতে আমাকে আদেশ মুবারক করেছেন। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে শুধু আপনাকে এরূপ মুবারক গুণে বিভূষিত করেছেন। আপনাকে ‘আউওয়াল’ আখ্যা মুবারক দিয়েছেন এজন্য যে, আপনিই হচ্ছেন সকল হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদি বা প্রথম। আপনার নূর মুবারক উনাকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে দেয়া হয়। অতঃপর একজনের পর একজন ক্রমাগত স্থানান্তরিত করে এই শেষ যামানায় আপনাকে প্রকাশ করা হয়। আপনাকে ‘আখির’ আখ্যা মুবারক দেয়ার কারণ হচ্ছে, আপনি যামানার দিক দিয়ে সকল হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের শেষ এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত আপনিই সর্বশেষ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আপনাকে ‘বাতিন’ বলা হয়েছে এ কারণে যে, আপনার সম্মানিত পূর্বপিতা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে আরশে আযীম উনার খুঁটির মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উনার সাথে আপনার নাম মুবারক সংযুক্ত করে রেখেছিলেন। পরে আপনার প্রতি আমাকে ছলাত (দুরূদ) শরীফ পাঠ করার জন্য আদেশ মুবারক করেন। আপনার প্রতি আমি হাজার হাজার বছর ধরে দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলাম যেই পর্যন্ত না মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে বাশীর বা সুসংবাদ দানকারী, নাযীর বা সতর্ককারী মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে উনার দিকে আহ্বানকারী ও সিরাজুম মুনীর বা উজ্জ্বল প্রদীপস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আর আপনাকে ‘যাহির’ আখ্যা দিয়েছেন এজন্য যে, তিনি আপনাকে সমস্ত দ্বীন উনাদের উপর প্রাধান্য বা আধিপত্য দিয়ে এবং আপনার মুবারক নুবুওওয়াত, মর্যাদা ও মহিমাকে সমগ্র আসমান ও যমীনবাসীর নিকট সুবিদিত করেছেন। এবং তিনি উনার নাম মুবারক থেকে আপনার নাম মুবারক বিন্যাস করেছেন এবং উনার মুবারক গুণে গুণান্বিত করেছেন। তাই আপনার সম্মানিত রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন মাহমূদ এবং আপনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সমস্ত প্রশংসা সেই মহিমাময় মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য যিনি আমাকে সমস্ত সৃষ্টির উপর সার্বিকভাবে মহাসম্মানিত নূরুল কুদরত বা ওজুদ মুবারক হিসেবে ফযীলত মুবারক দান করেছেন সাথে সাথে আমার মহাসম্মানিত ইসম মুবারক এবং আমার মহাসম্মানিত ছিফত মুবারক অর্থাৎ আমার নাম মুবারককেও এবং আমার মুবারক গুণ-বৈশিষ্ট্যসমূহকেও সমস্ত সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আল মালায ওয়াল ই’তিছাম)
উপরোক্ত বর্ণনা মুবারকের আলোকে প্রতিভাত যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও শ্রেষ্ঠতম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বীয় গুণে গুণান্বিত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আরো উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ছানা-ছিফত মুবারকের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে এবং উনার ছানা-ছিফত মুবারক কায়িনাতবাসীকে করার জন্য আদেশ মুবারক করা হয়েছে। একইভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও ছানা-ছিফত মুবারকের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে এবং উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক করার জন্য উম্মতকে আদেশ মুবারক করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত ও আনুগত্য করার ব্যাপারে আদেশ মুবারক করা হয়েছে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত ও আনুগত্য করার ব্যাপারে আদেশ মুবারক করা হয়েছে। পাশাপাশি মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকেও মুহব্বত ও আনুগত্য করার ব্যাপারে আদেশ মুবারক করা হয়েছে।
মূলকথা হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত ঈমানদার হওয়া যায় না।
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে আদেশ মুবারক হয়েছে-
اٰمِنُوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ
অর্থ: ঈমান আন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৬)
মুহব্বত করার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَحِبُّوا اللهَ لِمَا يَغْذُوْكُمْ مِّنْ نّـعْمَةٍ وَّاَحِبُّوْنِـىْ لـِحُبّ اللهِ وَاَحِبُّوْا اَهْلَ بَــيْـتِـىْ لِـحُبّـىْ
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো, কেননা তিনি তোমাদেরকে নিয়ামতের মাধ্যমে খাদ্য-সামগ্রী দিয়ে থাকেন। আর মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত পাওয়ার জন্য আমাকে মুহব্বত করো। আর আমার মুহব্বত পাওয়ার জন্য আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো। (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম, ত্ববারনী শরীফ, শু‘য়াবুল ঈমান, মিশকাত শরীফ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত পেতে হলে উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহব্বত করতে হবে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত পেতে হলে উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে।
আনুগত্য বা অনুসরণের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আদেশ মুবারক হয়েছে-
اَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করো এবং মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো এবং উলিল আমর তথা মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আনুগত্য বা অনুসরণ করো। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
উল্লেখ্য, হিদায়েত লাভের ক্ষেত্রে পবিত্র, নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিত্ব ছাড়া কেউ অনুসরণীয় হতে পারে না। আর পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা মুত্বহহার ও মুত্বহহির অর্থাৎ মহাপবিত্র এবং পবিত্রতা দানকারী।
প্রতিভাত যে, ঈমান, মুহব্বত, ইত্বাআত অর্থাৎ
اَطِيْعُوْا . اَحِبُّوْا. اٰمِنُوْا
প্রত্যেকটি শব্দ মুবারক যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত হয়েছে। ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত হয়েছে। অনুরূপভাবে মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক শানেও ব্যবহৃত হয়েছে।
উল্লেখ্য, اٰمِنُوْا (আমিনূ) শব্দ মুবারকটি اَحِبُّوْا (আহিব্বূ) শব্দ মুবারকের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত রয়েছে। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত না করা পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হিসেবে গন্য হবে না।
স্মরণীয় যে-
 (ছানাউন)ثَنَاءٌ. (মাদহুন)  مَدْحٌ (শুকরুন) شُكْرٌ
حَمْدٌ  (হামদুন)
ইত্যাদি শব্দ মুবারকসমূহ মুরাদিফ তথা সমার্থবোধক শব্দ এবং প্রতিটি শব্দ মুবারক ছানা-ছিফত বা প্রশংসার অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ سَعِيدِن الْـخـُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَّـمْ يَشْكُرِ النَّاسَ لَـمْ يَشْكُرِ اللهَ
অর্থ: হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে মানুষের শোকর বা প্রশংসা করতে পারে না, সে মহান আল্লাহ পাক উনারও শোকর বা প্রশংসা করতে পারে না। (তিরমিযী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
সুপ্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে বায়দ্বাবীতে সূরা ফাতিহা শরীফ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছে-
تَقُوْلُ حَـمِدْتُّ زَيْدًا
অর্থ: তুমি বলে থাক, আমি যায়েদ নামক ব্যক্তির প্রশংসা করেছি।
অনুরূপ سُبْحٌ (সুবহুন) ও سُبْحَانَ (সুবহানা) সমার্থবোধক শব্দ মুবারক দুখানিও পবিত্র ও প্রশংসা অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন সূরা ফাতাহ শরীফ উনার ৯নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَتُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا
অর্থ: মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত করো সকাল ও সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে। (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)
একইভাবে شَاءَ (শাআ) শব্দ মুবারকের ব্যবহার মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত বান্দা বা উম্মতের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। যেমন সূরা হামীম সাজদাহ শরীফ উনার ৪০ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুবারক শানে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ
অর্থ: আপনাদের যা ইচ্ছা আমল করুন।
এছাড়াও شَاءَ (শাআ) শব্দ মুবারক উনার রুপান্তরিত শব্দ মুবারক সূরা বাক্বারাহ শরীফ: আয়াত শরীফ নং ৫৮, পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: আয়াত শরীফ নং ১৫৫, সূরা কাহাফ শরীফ: আয়াত শরীফ নং ৭৭ ইত্যাদি সহ আরো বহু আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে।
জানা আবশ্যক,
اِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالٰـى
কালাম বা বাক্য মুবারকের অর্থ হচ্ছে, যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি চান। আর যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চান বলা হয় তাহলে তার আরবী কালাম বা বাক্য কি হবে সেক্ষেত্রে তো এটাই বলতে হবে-
اِنْ شَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আর যদি হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম চান বলা হয় তাহলে তো উনার নামই বলা হবে। যেমন-
اِنْ شَاءَ مُرْشِدٌ قِبْلَهْ عَلَيْهِ السَّلَامُ
অর্থ: যদি হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি চান।
আর যদি হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম চান তাহলে উনার ক্ষেত্রে বলা হবে:
اِنْ شَائَتْ اُمُّ الْاُمَم ِعَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: যদি হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি চান।
উক্ত বিষয় সমূহ সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ হওয়ার কোন কারণই হতে পারে না।
কেননা মানুষ পরস্পর কথোপকথনের মধ্যে তো বলেই থাকে, আপনি চাইলেই সেটা হবে। অথবা বলে, তিনি চাইলে সেটা হবে ইত্যাদি। তাহলে যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার খলীফা এবং মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খলীফা বা প্রতিনিধি উনার শানে যদি বলা হয়, তিনি যদি চান তাহলে অবশ্যই তা হবে। সেটা শরীয়ত উনার খিলাফ হবে কেন? সেটা মোটেও শরীয়ত উনার খিলাফ নয়। বরং সম্পূর্ণরূপে সম্মানিত শরীয়ত উনার বিধান সম্মত।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, হযরত বাহলুল দানা রহমতুল্লাহি আলাইহি নামক একজন মজ্জুব ওলীআল্লাহ ছিলেন। তিনি উনার শায়খ বা মুর্শিদ  ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে একবার জিজ্ঞাসা করলেন, হুযূর! আপনি কেমন আছেন? উত্তরে তিনি বললেন, খুব ভাল। হযরত বাহলুল দানা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জানতে চাইলেন, কিরূপ ভাল। জওয়াবে উনার শায়খ বললেন, এরূপ ভাল যে, আমি যা চাই সেটাই হয়। আর আমি যেটা চাই না সেটা হয়না।” সুবহানাল্লাহ!
মুরীদ সবিনয়ে আরজ করলেন। হুযূর! বেয়াদবী ক্ষমা চাই। এটা কেমন হাল? আপনি যা চান তাই হয়, আর যা চান না, তা হয় না? দয়া করে এর হাক্বীক্বত বর্ণনা করবেন কি?
তখন শায়খ বা মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি বললেন, মূলতঃ আমি আমার মতকে মহান আল্লাহ পাক উনার মতের সাথে মিলিয়ে দিয়েছি অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি যা চান আমি সেটাই চাই। তাই সেটাই হয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেটা চাননা, আমিও সেটা চাইনা। তাই সেটা হয় না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, সুওয়ালে উল্লেখিত প্রশংসামূলক শব্দ মুবারক সমূহ মহাম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারকে ব্যবহার করাটা সম্পূর্ণরূপেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তথা সম্মানিত শরীয়ত উনার বিধান সম্মত।
অতএব, উক্ত কালাম বা বাক্যসমূহ একসাথে এভাবে বলা যেতে পারে-
اَلْـحَمْدُ لِلّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ وَاَهْلِ بَيْتِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سُبْحَانَ اللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَاَهْلِ بَيْتِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اِنْ شَاءَ اللهُ وَرَسُوْلُه وَاَهْلُ بَيْتِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অথবা আলাদাভাবেও বলা যেতে পারে। যেমন-
 (۱) اَلْـحَمْدُ لِلّٰهِ.
اَلْـحَمْدُ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
اَلْـحَمْدُ لِاَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
اَلْـحَمْدُ لِـحَضْرَتْ‌ اِمَامِ الْاُمَمِ  عَلَيْهِ السَّلَامُ.
اَلْـحَمْدُ لِـحَضْرَتْ اُمِّ الْاُمَم ِعَلَيْهَا السَّلَامُ
۲) سُبْحَانَ اللهِ.
سُبْحَانَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
سُبْحَانَ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سُبْحَانَ حَضْرَتْ اِمَامِ الْاُمَمِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
سُبْحَانَ حَضْرَتْ اُمِّ الْاُمَم ِعَلَيْهَا السَّلَامُ.
۳) اِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالٰـى
اِنْ شَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
اِنْ شَاءَ اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. اِنْ شَاءَ حَضْرَتْ اِمَامُ الْاُمَمِ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
اِنْ شَائَتْ حَضْرَتْ اُمُّ الْاُمَم ِعَلَيْهَا السَّلَامُ.
উপরে উল্লেখিত দলীল সমৃদ্ধ আলোচনা থেকে প্রতিভাত হয়েছে যে, আলহামদু, সুবহানা, ইংশাআ ইত্যাদি শব্দ মুবারক মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারকেও ব্যবহার করা জায়িয রয়েছে। এমনকি ইলমে তাছাওউফ উনার দৃষ্টিতে এভাবে বলা অনেক ক্ষেত্রেই আদবের অন্তর্ভুক্ত। তা নাজায়িয, হারাম, কুফর, শিরক, বিদআত ইত্যাদি কোনটিই নয়। এ সবের কোন একটি কেউ বললে তাকে তার বক্তব্যের স্বপক্ষে দলীল পেশ করতে হবে। অন্যথায় সে মিথ্যাবাদী ও লা’নতগ্রস্ত তথা মালউন হিসেবে গন্য হবে।
নাউযুবিল্লাহ!
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)

No comments:

Post a Comment

Featured post

নজিরবিহীন ঘোষণা মুবারক

কায়িনাতের সবকিছুই সাজাবো এবং সারা কায়িনাতের সবাইকে খাওয়াবো ____________________________________ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত...